অক্সফোর্ড এর রিসার্চ অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ২য় বৃহত্তম ফ্রীলান্সার সরবরাহকারী দেশ। এটিই বুঝিয়ে দিচ্ছে আমাদের তরুণ সমাজ ফ্রীল্যান্সিং সেক্টরে কাজ করতে আগ্রহী। শুধু তাই নয়, তারা ভালো ও করছে। 

আর এর দেখা দেখি আরো অনেকেই আছেন যারা এখন ফ্রীল্যান্সিং করতে চাচ্ছেন। তবে সবাই আসলে ঠিক পরিষ্কার ধারনা রাখেন না কিভাবে শুরু করা উচিত। তাই অনেক সময় তারা ভুল পথে পরিচালিত হয়ে ব্যার্থ হয়। এই পোস্টে আমরা স্টেপ বাই স্টেপ প্রসেস নিয়ে আলোচনা করবো। 

তবে একটা কথা শুরুতেই বলে নেয়া যেতে পারে যে ফ্রীল্যান্সিং খুব সহজ কিছু নয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এটি চাকরীর চাইতেও চ্যালেঞ্জিং, তবে এর সম্ভাবনা অনেক বড়। 

১) সঠিক ইন্ডাস্ট্রি সিলেক্ট করা

যেহেতু সব পেশাতেই ফ্রীল্যান্সিং করা যায়, তাই এটি অনেক সময় চ্যালেঞ্জিং হয়ে যায়, কোন পেশাতে ফ্রীল্যান্সিং ক্যারিয়ার ডেভেলপ করা যায়। আমরা সবসময় শুনে থাকি, এমন কোথাও কাজ করা উচিত যেখানে শখ আছে। 

আবার, মানুষের নানা রকমের শখ, ভাল লাগার জায়গা থাকে; কিন্তু সবকিছুর সমান মার্কেট ডিম্যান্ড থাকেনা। তাই আমরা যদি যাচাই করতে পারি, আমাদের ভাল লাগার জায়গাগুলোর মধ্যে কোনগুলোর চাহিদা আছে; তাহলে শখকে পেশায় পরিণত করার পথটুকু অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। বাংলাদেশে বসে, বিশ্বের বাজারে একজন ফ্রীল্যান্সার হিসেবে সার্ভিস দেয়ার জন্য অনেক রকমের কাজ রয়েছে, নিচে আমি বেশ কিছু ডিমান্ডিং কাজ এর নাম দিচ্ছি, যা আপনাকে ডিসিশন নিতে সহায়তা করবে।

 ১)ওয়েব ডেভেপলপমেন্ট

২) অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট

৩)অনুবাদ, ভার্চুয়াল অ্যাসিসট্যানট 

৪)অ্যাকাউন্টিং ও ফিন্যান্স সাপোর্ট

৫) কনটেন্ট রাইটিং

৬) ভিডিও এডিটিং

৭)ডিজিটাল মার্কেটিং

৮) এসইও

৯) এনিমেশন

২) কাজ শেখা এবং দক্ষতা অর্জনঃ 

যে ক্ষেত্রেই কাজ করতে আগ্রহী হন না কেন, যদি দক্ষতার ঘাটতি থাকে তাহলে বুদ্ধিমানের কাজ হবে, কাজ শুরুর আগে নিজেকে প্রশিক্ষিত করে নেয়া।  ইন্টারনেটে মোটামুটি সব বিষয়েই পাবেন প্রচুর ফ্রি/ পেইড রিসোর্স। 

ইউডেমি, ইউডাসিটি, স্কিলশেয়ার বা কোরসেরার মত বিশ্ববিখ্যাত প্লাটফর্মগুলোতে রয়েছে হাজারো টিউটোরিয়াল সহ অনলাইন মেন্টরশিপের সুবিধা । এছাড়া অফলাইনেও  বিভিন্ন নামীদামী ইন্সটিটিউটে এসব বিষয়ে ট্রেনিং, ডিপ্লোমা ইত্যাদি অফার করা হয়।

দক্ষতা উন্নয়নের আরেকটি জনপ্রিয় মাধ্যম হল ইন্টার্নশিপ। ইন্ডাস্ট্রি সংশ্লিষ্ট নামীদামী কোম্পানিতে ইন্টার্নি করার মাধ্যমে প্র্যাকটিকাল দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন সম্ভব।

৩) পোর্টফলিও তৈরি করা

কাজ শেখার পরের ধাপ হল পোর্টফলিও বানানো।  ফ্রিল্যান্সিং পেশায় সফল হওয়ার জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় পোর্টফলিও তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনার দক্ষতা প্রমানের অন্যতম উপায়। এতে টেকনিক্যাল স্কিলের পাশাপাশি শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রশিক্ষন ইত্যাদির পাশাপাশি কাজের অভিজ্ঞতা ও নমুনার বিস্তারিত বিবরণ রাখতে হবে।

 পোর্টফলিও আকর্ষণীয় করার জন্য প্রফেশনের সাথে তাল মিলিয়ে প্রতিনিয়ত এটিকে আপডেট রাখতে হবে। এর সাথে সাথে নতুন দক্ষতা তৈরিতে কাজ করে যেতে হবে।

নিজের একটি ওয়েবসাইট আপনার পোর্টফলিওর সবচে বড় প্লাস পয়েন্ট।  গুগলের ব্লগার, ওয়ার্ডপ্রেস, উইক্স বা উইব্লির সাহায্য আপনি সহজেই বিনামূল্য নিজের ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে নিতে পারেন।

এছাড়াও বিভিন্ন পেশার ক্ষেত্রে নানা রকমের বিশেষ পোর্টফলিও তৈরি করার ওয়েবসাইট থাকে। চাহিদামত এসব সাইটও আপনি ব্যবহার করতে পারেন। যেমন, গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে যারা কাজ করতে আগ্রহী, তারা বিহ্যানস প্লাটফর্মে পোর্টফলিও বানাতে পারেন।

৪) নেটওয়ার্ক এবং নেটওয়ার্কিং

ফ্রিল্যান্সিং এ আপনি গতানুগতিক চাকুরি করেন না বরং আপনাকেই আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাজ খুঁজে নিতে হয়। সঠিকভাবে নিজেকে উপস্থাপন করা আর কাজের জন্য পরিচিতি বাড়ানোর সবচে কার্যকরী মেথড হল নেটওয়ার্কিং। 

ফ্রিল্যান্সিংএর যে শাখাতেই থাকুন না কেন নেটওয়ার্ক তৈরি গুরুত্বপূর্ণ। নেটওয়ার্ক তৈরির জনপ্রিয় পদ্ধতিগুলোর মধ্যে রয়েছে পেশাগত ফোরাম, সোশ্যাল মিডিয়া, প্রফেশনাল ইভেন্টে অংশগ্রহণ ইত্যাদি। 

তবে পেশাগত নেটওয়ার্ক তৈরির সবচে ভাল উপায় হতে পারে ইন্টার্নশিপ, ভলান্টিয়ারি ওয়ার্ক ও বিভিন্ন ধরনের কম্পেটিশনে অংশ নেয়া। 

৫) মার্কেটপ্লেস খুঁজে বের করা এবং কাজ শুরু করা

কি সার্ভিস দিতে চাচ্ছেন তা নির্দিষ্ট করার পরের ধাপ হল উপযুক্ত মার্কেটপ্লেস নিশ্চিত করা। অর্থাৎ আপনি যে সার্ভিস সেল করতে চান তার চাহিদা কোথায় বেশি, অনলাইনে কোন মাধ্যমে এ সংক্রান্ত কাজ বেশি পাওয়া যায় তা বের করতে হবে। মার্কেটপ্লেস মুলত ক্লায়েন্ট এবং সার্ভিস সেলার এর মধ্যে যোগাযোগের প্লাটফর্ম। ক্লায়েন্ট  তার চাহিদা অনুযায়ী কাজের বিবরণ এবং সম্ভাব্য বাজেট দিয়ে পোষ্ট করে এবং সেলার তার অভিজ্ঞতা, পারিশ্রমিক অনুযায়ী কাজে বিড করে। 

মার্কেটপ্লেস ব্যবহারের অন্যতম সুবিধা হল নিয়মিত কাজ পাওয়া এবং সময়মত কাজের পেমেন্ট পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকা।

নবীন ফ্রীলান্সারদের জন্য সহজে কাজ পাওয়ার অন্যতম মাধ্যম হল এই মার্কেটপ্লেসগুলো। 

কিছু মার্কেপ্লেস সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক

বর্তমানে অনলাইনে আপওয়ার্ক, ফিভার, পিপল-পার-হাওয়ার ইত্যাদিতে মোটামুটি সব ধরনের কাজ পাওয়া যায়। 

ডিজিতাল মার্কেটিং থেকে সং রাইটিং, টেকনিক্যাল বা  সফট স্কিল, আপনার পছন্দমত কাজ এখান থেকে সহজেই খুঁজে পাবেন। 

এগুলো ছাড়াও বিভিন্ন ক্যাটাগরি ভিত্তিক মারকেটপ্লেস রয়েছে। যেমন গ্রাফিক এবং ওয়েব এলেমেন্ট সংক্রান্ত কাজের জন্য এনভাটো, ফ্রিপিক অত্যন্ত জনপ্রিয়। ফটোগ্রাফির বিখ্যাত ওয়েবসাইট হল এডোব স্টক, শাটারস্টক, ভেক্টর ইমেজ ইত্যাদি। 

এপিকিউরিয়াস বা ফুড.কম  টাইপের সাইটগুলোতে আপনি চাইলে কুকিং টিপস বা রেসিপি বিক্রির মত সার্ভিসও সেল করতে পারেন।

মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট করা

কোথায় কাজ করবেন তা ঠিক করার পরের ধাপ মার্কেটপ্লেসের নিয়মনীতি মেনে একাউন্ট খোলা। মোটামুটি সব মার্কেটেই একাউন্ট তৈরি করার পদ্ধতি একইরকম। প্রফেশনাল এবং প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত তথ্য সঠিকভাবে প্রদান এবং পোর্টফলিও সংযুক্ত করে একাউন্ট ওপেন করতে হবে। এক্ষেত্রে ভুয়া তথ্যর ব্যবহার এবং স্কিলের ফাঁকফোকর থাকলে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরুর আগেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। 

আবার নির্দিষ্ট কোন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে আবদ্ধ না থেকে ভাল হয় ভিন্ন ক্যাটাগরির একাধিক জায়গায় কাজের জন্য রেজিস্ট্রেশন করা।

রিসার্চ করা

একাউন্ট করার পর এবার পালা আপনার প্রোফাইলকে প্রফেশনালি গুছিয়ে নেয়া। এর জন্য সবচে সহজ উপায় হল অন্যরা কি করছে তা দেখা। অর্থাৎ, আপনি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করলে রিসার্চ করতে হবে অন্যান্য যারা ওয়েব নিয়ে সার্ভিস দিচ্ছে তারা ঠিক কি কি অফার করছে তা খুঁজে বের করা। এছাড়া তারা কি ধরণের টেকনোলোজি ব্যবহার করছে বা মার্কেটপ্লেসে কোন ধরণের স্কিলের চাহিদা বেশি এসব জানতে রিসার্চ দক্ষতার জুড়ি নাই।

সার্ভিসের মূল্য নির্ধারণ করা

আপনার ফ্রীলান্স সেবার মূল্য কত হবে তা ঠিক করার সিদ্ধান্ত আপনার। তবে এক্ষেত্রে বেশ কিছু বিবেচ্য বিষয় রয়েছে। মার্কেটে এই ধরণের সেবার গড় মূল্য যাচাই করে তবেই ঠিক করুন সার্ভিস চার্জ কিরকম হবে। 

আবার আপনার দক্ষতাও মূল্য নির্ধারণের অন্যতম ক্রাইটেরিয়া। সাধারণত উচ্চমানের দক্ষতা থাকলে ন্যায্যমূল্য  সার্ভিস চার্জ ও বেশি হবে। আবার মিডিয়াম স্কিল হলে সেবার দামও কিছুটা কম পাওয়া যায়।

 নতুন ফ্রীলান্সারদের জন্য প্রথমেই বাজারমূল্য সার্ভিস সেল করা কষ্টকর হলেও অন্যায্য মূল্য মেনে নেয়া উচিত নয়। 

মার্কেটপ্লেসে বা অনলাইনের অন্য যে মাধ্যমেই আপনি কাজ করেন না কেন, পারিশ্রমিক নেয়ার জন্য পেমেন্ট গেটওয়ে ঠিক করা গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে বাংলাদেশে পেওনিয়ার, জুম, ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, ট্রান্সফারওয়াইজ ইত্যাদি ব্যবহার করে সহজেই দেশের বাইরে থেকে টাকা আনা সম্ভব। 

 আবার বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসের ইন্টিগ্রেটেড পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করেও উপার্জিত টাকা উত্তোলন করা যায়। 

উভয় ক্ষেত্রেই ব্যাংক একাউন্ট থাকা প্রয়োজনীয়। 

৬) ব্র্যান্ডিং এবং বিক্রয় দক্ষতা

ফ্রীলান্সিং এ যারা লম্বা সময় ধরে ভাল কাজ করছেন তাদের সবাই সেলফ ব্র্যান্ডিং এবং বিক্রয় দক্ষতা বাড়ানোর পেছনে জোড় দিয়েছেন।  ভাল করতে হলে ব্র্যান্ডিং এর কোন বিকল্প নাই। পারদর্শিতা থাকা সত্ত্বেও আপনার ক্যারিয়ার গ্রোথ আশানুরূপ হবেনা, যদি এ বিষয়ে আপনি দুর্বল হন।

ব্র্যান্ডিং এর মূল পয়েন্ট হল, আপনি আসলেই কাজটা পারেন এবং আপনার দক্ষতা যে আন্তর্জাতিকমানের তা তুলে ধরা।

ফ্রীলান্সিংএ  সার্ভিস সেল করার দায়িত্ব আপনার নিজের। এক্ষেত্রে, কাজের বিশেষত্ব কি, কত দিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে, জটিল প্রজেক্টে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন কিনা, টেকনোলোজি ব্যবহারে পারদর্শীতা কেমন; ইত্যাদি বিষয়গুলো ক্লায়েন্টের কাছে কিভাবে প্রকাশ করছেন তা নির্দেশ করে আপনার সার্ভিস সেলিং স্কিল কতটা ভাল।

যোগাযোগ দক্ষতা

সফল ফ্রীলান্সার হওয়ার অন্যতম চাবিকাঠি হল সঠিকভাবে যোগাযোগের দক্ষতা। ফ্রীলান্সিং এর যে কোন কাজেই আপনাকে সরাসরি ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। ফলে যোগাযোগ দক্ষতা ভাল না হলে বিশেষ করে ইংরেজিতে ভাল না হলে ফ্রীলান্সিং ক্যারিয়ারে টিকে থাকা কষ্টকর। এক্ষেত্রে স্মার্ট হ্যাকস হল নিজেকে ইংরেজিতে দক্ষ করে তোলা। আর যদি আগে থেকেই দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে তা আরো উন্নত করা। কেননা সামান্য বানান ভুল ও ক্লায়েন্টের কাছে আপনার নেগেটিভ ইমেজ তৈরি করে। 

শিডিউল মেনে চলা

ফ্রীলান্সিং বিজনেসে ধরাবাঁধা কাজের চাপ নাই একথা যেমন সত্যি আবার যেকোনো প্রজেক্টের কাজ ডেডলাইন মেনে  সময়মত ডেলিভার করার সক্ষমতার সাথে এ ক্যারিয়ারের সফলতা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। 

স্মার্ট উপায় হল কাজের গুরুত্ত অনুযায়ী  শিডিউল তৈরি করে নেয়া। কাজের চাপ কম থাকলে শিডিউল কিছুটা শিথিল হতেই পারে। তবে আপনি শিডিউল অনুযায়ী উচ্চমানের কাজ ডেলিভারি দিতে চাইলে, সঠিক পরিকল্পনা মেনে চলা প্রয়োজন।

এর জন্য কোন কাজে কি পরিমান সময় লাগতে পারে তার সম্যক ধারনা রাখতে হবে। আবার কাজের চাপে নিজের ব্যক্তিগত জীবনে কি ধরনের প্রভাব পড়ছে তাও বিবেচনা করতে হবে। মূল বিষয় হল, সঠিক  সময়ে গুনগতমানের কাজ নিশ্চিত করাই যেন আপনার লক্ষ্য হয়। 

নিজেই নিজের বস, ফ্রীলান্সিং দুনিয়ায় প্রায়ই এ চিত্তাকর্ষক কথা শোনা যায়। কর্পোরেশনের বস যেমন তার অর্গানাইজেশনের সফলতা, দুর্বলতা সম্পর্কে ধারনা রাখে, তেমনি একজন নবীন ফ্রীলান্সারকেও তার পেশাগত সক্ষমতা, দুর্বলতা সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা রাখতে হবে। 

শত ভাগ পেশাদারিত্ব, আত্মবিশ্বাস আর দক্ষতা ফ্রীলান্সিং ক্যারিয়ারের সফলতার হাতিয়ার। আর ফ্রীলান্সিং এর মত স্মার্ট ক্যারিয়ারে ভাল করতে হলে সাধারণ পেশাজীবী নয় বরং একজন স্মার্ট প্রফেশনাল হতে জানতে হবে। হ্যাপি ফ্রীলান্সিং!!