ফাইবার এবং আপওয়ার্কের মত ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসের প্রচুর জনপ্রিয়তার কারনে আপনার পক্ষে হয়তো একটা সার্ভিস সেল করা কঠিন হয়ে ওঠতে পারে স্পেশালি ওয়েব ডিসাইন ফিল্ডে। আপনি হয়তো ভাবতে পারেন এরকমভাবে ক্লায়েন্টকে আকৃষ্ট করা আপনার জন্য খুবই কষ্টসাধ্য। কেননা, তারা উচ্চমানের কোয়ালিটি সম্পন্ন কাজের ফিডব্যাক চায় এবং তারা এর বদলে উচ্চ পারিশ্রমিক ও দিতে রাজি। এগুলো তারা এরকম পপুলার মার্কেট প্লেস থেকেই বেশী পেয়ে থাকে। কিন্তু আপনি ও সঠিক স্কিল এবং টুলসের সাহায্য নিয়ে তাদের কে আকৃষ্ট করতে পারেন এবং খুব দ্রুতই তাদের সাথে কাজ করতে পারবেন।

এখানে কিছু টিপস রয়েছে যা আপনাদের ওয়েব ডিজাইন ক্লায়েন্ট খুজতে সাহায্য করবে যারা আপনাকে আপনার কাজের সঠিক ভ্যালু দিবে। 

সোশ্যাল প্লাটফর্ম গুলোতে এক্টিভ থাকা

ক্লায়েন্টরা কোন সার্ভিস কেনার আগে তা যাচাই করে নিতে পছন্দ করে। মুলত, তারা যেসব লোকদের চিনে, জানে এবং বিশ্বাস করে তাদের থেকেই সার্ভিস নিয়ে থাকে। এজন্য আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটিভ প্রেসেন্স থাকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনি রেগুলারলি আপনার এক্সপারটিজ দেখালে অথবা নিজেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্রান্ডিং করলে খুব দ্রুতই একটা অডিয়েন্স তৈরি করতে পারবেন। দেখবেন খুব অল্প সময়ে তাদের সাথে নিজের একটা বন্ডিং তৈরি হয়ে যাচ্ছে।

মিটাআপে নেটওয়ার্ক বাড়ানো

আপনি কারো সাথে ইন্ডিভিজুয়ালি কমিউনিকেশন করলে এর ইফেক্টিভ রেসাল্ট পরবর্তী তে দেখা দিবে। আপনি যদি এভাবে কমিউনিকেশন করে থাকেন, তবে পটেনশিয়াল ক্লায়েন্ট আপনাকে অনলাইনের সেই ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ভাবা শুরু করবে না। বরং আপনাকে একজন ট্রাস্টেড এক্সপারটিজ হিসেবে দেখবে যে কিনা তার কাজ সম্পর্কে জানে। 

নেটওয়ার্কিং হচ্ছে এরকম ভাবে টার্গেট অডিয়েন্সদের সাথে কানেকশন বানানোর একটি সহজ উপায়। আপনি নেটওয়ার্কিং করার জন্য কিছু লোকাল মিটআপ ইভেন্টে জয়েন করতে পারেন। সেখানে আপনার আদর্শ ক্লায়ন্ট অবশ্যই প্রেসেন্ট থাকবে। মনে রাখবেন, প্রথম ক্লায়েন্ট অপরচুনিটি পেয়ে যাওয়া মানে হচ্ছে ফিউচারে আপনার বিজনেস গ্রোথ বাড়ানো। 

স্কিল বেসড কন্টেন্ট তৈরি করা

আপনার ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে যে স্কিলগুলো আছে সেগুলোর চাহিদা অনেক বেশী। আপনি হয়তো চিন্তা ও করতে পারবেন না হাজার হাজার লোক বিজনেস কার্ড কিভাবে  ডিজাইন করতে হবে তার জন্য সার্চ দিচ্ছে। এগুলো জানার আগ্রহ এখন অনেকের। এসব টপিকের উপর ব্লগ পোস্ট আপনাকে লং রানে প্রচুর লিড জেনারেট করার সুযোগ করে দিবে। এটি ই-বুক হতে পারে অথবা পোডকাস্ট আকারে বের করতে পারেন। আপনি সোশ্যাল মিডিয়াতে এটি জানিয়ে পোস্ট করতে পারেন এবং সেখানে ১০০ জনকে গিভওয়ে অফার করতে পারেন যারা আপনার পোস্ট এ কমেন্ট করবে। এতে করে একটা কমিউনিকেশন দুই সাইড থেকে গড়ে উঠবে। এছাড়া আপনি আপনার ব্লগিং সাইট এ একটা নিউজলেটার সাইন আপ ফর্ম দিতে পারেন। সেখানে আপনি রিডার এর প্রচুর ই-মেইল কালেক্ট করতে পারবেন।  এটিও ক্লায়েন্ট খুজে পাওয়ার দারুন মেথড হতে পারে।

ল্যান্ডিং পেইজ ডিসাইন করা

ডিজাইনার হিসেবে আপনার জন্য ল্যান্ডিং পেইজ ডিজাইন করাটা তেমন কঠিন কিছু না। এই কোয়ালিটি আপনার অনেক ক্লায়েন্ট প্রশংসা করবে তবে এটি যত দ্রুত বানানো যায় তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আপনার ল্যান্ডিং পেইজ আপনার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে যত শেয়ার করা যায় তত ভাল এবং সেটাতে আপনার পূর্বের সকল কন্টেন্ট এর ইনফো থাকাটা ও জরুরী (পোডকাস্ট, ই-বুক, ইনফোগ্রাফিক)।

 অন্যান্য ফ্রিল্যান্সারদের সাথে পার্টনারশিপ

দ্রুত ক্লায়েন্ট পাওয়ার অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সারদেরকে রিচ করা, এজেন্সিদের রিচ করা যারা সেইম সার্ভিস প্রোভাইড করে থাকে। এই ট্রিক আপনার এবং আপনার পার্টনার কোম্পানির উভয়ের জন্য লাভজনক হতে পারে। আপনি আপনার পার্টনারের এক্সিস্টিং ক্লায়েন্ট যেমন পেতে পারেন, তেমনি আপনার পার্টনার ও তাদের ক্লায়েন্টকে আপনার সার্ভিস সেল করে নিজেদের জন্য এক্সট্রা ভ্যালু এড করে নিতে পারে। তাই আপনি তাদেরকে টার্গেট করুন যারা আপনার মতই সেইম সার্ভিস দিয়ে থাকে। তাদের প্রপোসাল পাঠান যাতে করে তাদের সাইড থেকে ও তারা কি পেতে যাচ্ছে তা ক্লিয়ার থাকে।

পাস্ট ক্লায়েন্ট এর রেফারেল চাওয়া

আপনার নতুন ক্লায়েন্টদের জন্য পূর্বের ক্লায়েন্টদের থেকে রেফারেল পাওয়া খুবই ভাল এডিশন হতে পারে। তাদের থেকে এমন উষ্ণ অভ্যর্থনা পাওয়া আপনার নিকট ভবিষ্যতে খুব কোয়ালিটি প্রজেক্টে যুক্ত করার সুযোগ করে দিবে। ক্লায়েন্টদের থেকে রেফারেল নেওয়ার সঠিক সময় হচ্ছে আপনি যখন প্রজেক্ট পুরোপুরি কমপ্লিট করে তার কাছে ডেলিভার করবেন। আপনি সার্ভে ফর্ম তৈরি করে ও তার কাছ থেকে ইনপুট নিতে পারেন এবং সেই ফর্ম ও আপনার পোর্টফলিও তে এড করে নিতে পারেন।

উপরের এসব স্ট্র্যাটেজি শর্ট পিরিয়ডে ভাল কাজ করবে আপনার নতুন ওয়েব ডিজাইন লিড খুজে পাওয়ার জন্য কিন্ত লং রানে এটি তেমন সাস্টেনেবল না ও হতে পারে। শর্ট টার্ম এবং লং টার্ম লিড জেনারেশন এর স্ট্যাটেজি এর উপর ভিত্তি করে আপনি আপনার প্ল্যান গুছাতে পারেন।

কিন্তু যারা অল্প সময়ের উপর পুঁজি করে কিছু ক্লায়েন্ট নিজেদের এডিশনে রাখতে চাচ্ছে, তাদের জন্য উপরের টিপসগুলো ভাল ট্যাক্টিস হিসেবে কাজে দিবে।