দিন দিন রিমোট জবে কাজের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এরকম জব অপরচুনিটি টেক রিলেটেড ফিল্ডে বেশী দেখা যাচ্ছে। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে এই ধরনের অপরচুনিটিতে অনেক বেশী এটেনশন এবং পজিটিভ রিভিউ পাওয়া যাচ্ছে। তাই এ ধরনের কাজে অংশগ্রহণ করতে প্রচুর আগ্রহী জনতা দেখতে পাওয়া যায়।  কিন্তু অনেকেই আছেন যারা রিমোট জব এবং ফ্রিল্যান্সিং জব সেইম মনে করে তাল গোল পাকিয়ে ফেলে। কিন্তু ব্যাপারটি সেরকম না। এই দুই প্রকারের জবের মধ্যেও অনেক ভ্যারিয়েশন এবং ডিফারেন্স আছে। আর অনেকেই এ দুই জব ক্যাটাগরির মাঝে সেই বেসিক ডিফারেন্স ফিল করতে পারে না। তাই আজকের টপিকে এ দুটোর মাঝে ডিফারেন্সগুলো তুলে আনার চেষ্টা করবো যাতে সবাই পরবর্তীতে আর কনফিউশনে না ভোগে। শুরুতেই চলুন জেনে আসি কোন জব কি রকমঃ

রিমোট জব এবং ফ্রিল্যান্সিং জব মিনিং

রিমোট জব বলতে সেই সব জবকে বুঝায় যে সব জবে আপনাকে কোন কোম্পানি বা অরগানাইজেশন হায়ার করবে কিন্তু আপনার স্ব-শরীরে অফিসে উপস্থিত হতে হবে না। অর্থাৎ, রিমোট জব হচ্ছে ফুল টাইম জব বা কন্ট্রাকচুয়াল জব যা আপনি অফিসের দূরে থেকে ও করতে পারবেন। কোম্পানি গুলোর একটি নির্দিষ্ট ওয়ার্কিং টাইম থাকে এবং প্রতিটি এমপ্লয়িকে এ টাইম টেবিল মেইন্টেইন করতে হয়। আপনি কোথায় থেকে কাজ করছেন বা কি ধরনের ড্রেস পড়েছেন তা ম্যাটার করবে না। আপনি যদি রিলায়েবল হন এবং স্কিল থাকে, মোস্ট ইম্পরট্যান্টলি আপনার পিসি এবং ইন্টারনেট সংযোগ আছে তাহলে আপনার এই কাজ করতে কোন বাধা নেই।   

 অপরদিকে, ফ্রিল্যান্স জবে এমপ্লয়মেন্ট রুলস থাকে না, এগুলো হয়ে থাকে প্রজেক্ট বেসড কন্ট্রাক্ট। আপনার কোন রকম ওয়ার্কিং টাইম মেইন্টেইন করতে হয় না। বরং আপনি আপনার শিডিউলিং করে নিতে পারবেন। প্রজেক্ট এর কমপ্লিশন এর মাধ্যমে তাদের কন্ট্রাক্ট শেষ হয়ে যায়। ফ্রিল্যান্সাররা মেইনলি প্রজেক্ট এর কোন এক পার্ট এ চুক্তিবদ্ধ হয়ে থাকে, আবার কোন সময় ফুল প্রজেক্ট এ যুক্ত থাকে। এটি আগে থেকেই ডিসাইড করে নেওয়া হয়। এরপর ডেডলাইনের ভিতর তাদের কাজ সাবমিট করতে হয়। 

সিলেকশন প্রসেস

ফ্রিল্যান্সিং জবগুলো পাওয়া বর্তমানে খুবই কঠিন যদি আপনি পপুলার মার্কেট প্লেস যেমনঃ আপওয়ার্ক ব্যবহার করে থাকেন। এখানে প্রায় সময় লোয়েস্ট বিড করা ফ্রিল্যান্সাররা কাজ পেয়ে থাকে। অপরদিকে, কোম্পানি গুলো রিমোটলি হায়ার করার সময় কিছু জিনিষ খেয়াল রাখে।

এগুলো হচ্ছেঃ

১) আপনার কি স্কিল আছে জবটি করার জন্য?

২) আপনি কি রিমোট টিমে ভালোভাবে কমিউনিকেট করতে পারছেন?

রিমোটলি হায়ারিং প্রসেস ট্র্যাডিশনালি দীর্ঘ হয়ে থাকে। আপনি প্রথমত রিমোট জবটিতে এপ্লাই করবেন এবং সাথে দরকারী কিছু ডকুমেন্ট দিবেন। এরপর আপনার ইন্টারভিউ এবং টেস্ট হবে। আপনি এ প্রসেস এ সিলেক্ট হলে ফাইনাল একটি ইন্টারভিউ ও হতে পারে। রিমোট হায়ারিং এরকম স্ট্রাকচারড প্রসেস এ করে থাকে রিক্রট্মেন্ট রিমোট কোম্পানিগুলো।

আবার, ফ্রিল্যান্সিং জবগুলো একপ্রকার রিমোট জবে পরিবর্তন হতে পারে। কিভাবে? আপনার এক্সিসটিং কোন ক্লায়েন্ট এর সাথে লং টার্ম বন্ডিং থাকলে;তার বড় কোন প্রজেক্টে যুক্ত করার জন্য এমপ্লয়ি দরকার  হতে পারে, তখন আপনি এরকম অপরচুনিটি পেতে পারেন।

অনিশ্চয়তা

 ফ্রিল্যান্সিং লাইফে আপনি অনেক অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকবেন এবং এটি এই ক্যারিয়ারে সবচেয়ে কুল ফ্যাক্টর গুলার মধ্যে একটা। কেননা, এরকম সিচুউয়েশন ফেস করতে হবে জেনে ও কেউ কেউ এই পথ বেছে নেয়। অপরদিকে, রিমোট জব এক্ষেত্রে খুব সিকিউর এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং জব থেকে ও এগিয়ে থাকবে। তাদের ইনকাম স্ট্যাবল থাকে সবসময় এবং পারফরমান্স অনুযায়ী বাড়ে।

ফ্রিল্যান্সিং জবে এ সমস্যা টা থাকলে ও প্রপার প্ল্যানিং এর মাধ্যমে একটা সময় এটা কাটিয়ে সম্ভব হয়। তারা নিজেদের রেট নিজেরা ডিসাইড করতে পারে এবং প্রজেক্টের ধরনের উপর ডিপেন্ড করে বেশী চার্জ করতে পারে। অর্থাৎ ফি সংক্রান্ত যাবতীয় ডিসিশন তার কন্ট্রোলে থাকবে। এজন্য নিজের কন্ট্রোলে সবকিছু থাকছে বলে, চ্যালেঞ্জিং এই সেক্টর টাকে অনেকেই প্রেফার করে।

একটি জিনিষের মধ্যে মিল পাওয়া যায় দু ক্ষেত্রেই। সেটি হচ্ছেঃ জব চলাকালীন সময়ে আপনার ফোকাস ধরে রাখতে হবে কেননা, আপনি আপনার সহকারী কর্মচারীদের থেকে দূরে থাকবেন। একইসাথে, কমিউনিকেশন রেগুলারলি হচ্ছে কিনা এবং ডেইলি রুটিন ও থাকাটা আপনার জন্যে মেন্ডেটরি। এগুলো নিশ্চিত হয়ে গেলে দূরে থেকে ও আপনি আপনার কাজের প্রপার আউটপুট দিতে পারবেন। 

বেনিফিটস

রিমোট ওয়ার্কে ওয়ার্কারদের অনেক কোম্পানি এমপ্লয়ি বেনিফিট দিয়ে থাকে, যেমনঃ রিটায়ারমেন্ট ভাতা, মেডিকেল বীমা। আপনাকে হয়তো এসব বেনিফিট পাওয়ার জন্য কিছু পে করতে হতে পারে, কিন্তু আপনার এমপ্লয়ার এগুলোর বেশ কিছু অংশ নিজে থেকে বহন করে থাকে। অপরদিকে, ফ্রিল্যান্সারদের মেডিকেল বীমা এবং রিটায়ারমেন্ট প্ল্যান নিজে থেকে করে নিতে হয়। তারা পেইড ভ্যাকেশন, ম্যাটারনিটি লিভ এরকম কিছু সুবিধা কোম্পানি থেকে নিতে পারে না। বরং তাদের নিজেদেরকেই নিজের এইচআর (HR) হতে হয় এবং আগে থেকেই সবকিছুর প্ল্যানিং (ফাইনানশিয়াল) করার মত দক্ষ হতে হয়। 

ফিডব্যাক

আপনি এমপ্লয়ি হিসেবে, আপনার কাজের উপর টাইম-টু-টাইম ফিডব্যাক পেতে থাকবেন। সেগুলো রেগুলার ফিডব্যাক না হলে ও উইকলি বা মান্থলি বেসিসে ও হতে পারে। আপনার এমপ্লয়ার থেকে এরকম রেগুলার ফিডব্যাক আপনাকে কাজে ইম্প্রভমেন্ট আনতে সহায়তা করবে।  তারা আপনাকে যতদুর সম্ভব সাহায্য করার চেষ্টা  করবে যাতে আপনি প্রফেশনাল হিসেবে প্রজেক্ট ডেলিভারি দিতে পারেন। কিন্ত ফ্রিল্যান্সাররা এরকম ফিডব্যাক কখনো পায় না, এমনকি তারা ফরমাল এভালুয়েশন (Evaluation) ও পায় না। তারা আপনার থেকে আশা করছে , আপনি যে কাজ ডেলিভারি দিতে যাচ্ছেন, সেগুলো তে আপনি আগে থেকে এক্সপেরিয়েন্সড। 

 দিনশেষে যতটা সম্ভব প্রোডাক্টিভ থাকা যায় এবং কাজ এগিয়ে রাখা যায় সেগুলো আপনার মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। এখন আপনি যে রকম ক্যারিয়ার বাছাই করবেন, এটি সম্পূর্ণ আপনার সিদ্ধান্ত হবে।