বুককিপিং ক্লায়েন্ট খুঁজে পাওয়াটা খুব কঠিন কাজ, বিশেষ করে নতুন বুককিপারদের জন্য। আপনি ক্লায়েন্ট খোঁজার পিছনে অনেক টাইম ইনভেস্ট করবেন কিন্তু এর বিনিময়ে আপনি কোন রিটার্ন না ও পেতে পারেন। কিন্তু বর্তমান টেকনোলজির যুগে এই কাজটি ও অনেক সহজ হয়ে যাচ্ছে। বেশ কিছু সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং টুলস এবং এপ্স আছে যেগুলোর সাহায্যে আপনি অনায়াসেই ক্লায়েন্টদেরকে আকৃষ্ট করতে পারবেন। আপনি যদি সাকসেসফুল এবং প্রফিটেবল বুককিপিং ফার্ম রান করতে চান, তাহলে আপনার বর্তমান ক্লায়েন্ট বেস গ্রো করাতে হবে। এই আর্টিকেলে বেশ কিছু প্রুভেন মেথড রয়েছে যার মাধ্যমে ওরকম স্পেন্ডিং না করে ও আপনি বুককিপিং ক্লায়েন্ট পেতে পারেন সহজে। চলুন জেনে আসি মেথড গুলোঃ
১) রেফারেল পার্টনারশিপ তৈরি করুন
রেফারেল পার্টনারশিপ হচ্ছে সবচেয়ে ইফেক্টিভ পদ্ধতি নতুন ক্লায়েন্ট পাওয়ার জন্য। আপনি অনেক প্রফেশনালদের খুঁজে পাবেন যারা তাদের ক্লায়েন্টের জন্য একাউন্টিং এবং বুককিপিং সার্ভিস খুঁজে বেড়াচ্ছে। যদি আপনি সেসব প্রফেশনালদের সাথে পার্টনারশিপ ফর্ম করতে পারেন, তবে আপনি সবসময় নিউ লিড এবং ক্লায়েন্ট ফ্লো বজায় রাখতে পারবেন।
আপনার বুঝার সুবিধার্থে, এখানে কিছু লিস্ট করা হল যাদের সাথে আপনি পার্টনারশিপ বিল্ড করতে পারেন
- ব্যাংকার
- এটর্নি
- ইনস্যুরেন্স এজেন্ট
- রিয়েল এস্টেট এজেন্ট
- মার্কেটিং কনসালটেন্ট
- ফাইনান্স এডভাইসর
আপনি কখনো ওয়ান-টাইম রেফারেল এর জন্য তাদের খুঁজবেন না। এটি একটি ভুল এ্যাপ্রোচ। বরং আপনি নিশ্চয়ই এমন কাউকে চাইবেন যার থেকে কন্সিস্টেন্ট কোয়ালিটি রেফারেল পাবেন লম্বা সময় ধরে। তাদের সাথে লাস্টিং পার্টনারশিপ ধরে রাখার জন্য নিচের কিছু টিপস ফলো করতে পারেন।
- লাঞ্চ করুন একসাথে : কোন এক নেটওয়ার্কিং ইভেন্টে তাদের সাথে দেখা হলো এবং হাই-হ্যালো শেষে সাথে সাথে রেফারেল চেয়ে বসলেন। ব্যাপারটা কেমন হল? এরকম আপনি নিশ্চয় করবেন না ! তারা আপনাকে জানবে, ট্রাস্ট করবে, পচ্ছন্দ করবে এবং এরপর আপনাকে নতুন বিজনেস প্রোপসাল পাঠাবে। সুতরাং তাদের সাথে মিটিং এ বসুন, এক্ষেত্রে একসাথে লাঞ্চ করাটা বেস্ট হবে।
- মিট করুন রেগুলারলি : তাদের সাথে প্রতি ২-৩ মাস পর পর মিটিং ফিক্স করুন। এতে আপনি তাদের প্রায়োরিটি লিস্টে থাকবেন যখন তাদের রেফারেল অপরচুনিটি আসবে।
- আপনার আইডিয়া রেফারেল পিচ করুন এবং বিজনেস কার্ড দিন : আপনি আপনার রেফারেল পার্টনার কে আইডিয়া রেফারেল পিচ করুন। যেমনঃ আপনি কি ধরনের ইন্ডাস্ট্রিতে সার্ভ করছেন বা কি ধরনের সার্ভিস প্রোভাইড করে থাকেন ইত্যাদি। এগুলো আপনার কোয়ালিটি রেফারেল আসতে সহায়তা করবে। এছাড়া লোকজন অনেক ভুলমনা হয়ে থাকে । এটা স্বাভাবিক যে আপনার পার্টনার রেফারেল দেওয়ার পর ও তাদের ক্লায়েন্ট আপনার ব্যাপারে ভুলে যাবে। তাই আপনি তাদের ক্লায়েন্ট কে তাদের মাধ্যমে বিজনেস কার্ড প্রোভাইড করে দিবেন ।
২) ক্লায়েন্টদের থেকে রেফারেল নিন
আপনার যদি এক্সিসটিং ক্লায়েন্ট থেকে থাকে, তবে এই স্টেপটি হবে সবচেয়ে ফাস্টেস্ট স্টেপ। আপনার ক্লায়েন্ট আপনার সম্পর্কে অলরেডি জানে এবং আপনাকে ট্রাস্ট ও করে, এক্ষেত্রে আপনাকে বেশী পরিশ্রম করতে হবে না। শুধুমাত্র তাকে জিজ্ঞাসা করে নিলেই আপনি তার থেকে সম্মতি পেতে পারেন।
৩) নেটওয়ার্কিং গ্রুপ এবং ইভেন্ট জয়েন করুন
নতুন ক্লায়েন্ট খুঁজে পাওয়ার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেপ হতে পারে। চিন্তা করে দেখুন তো একটি রুমে আপনার সব ক্লায়েন্ট আপনার জন্য অপেক্ষা করছে! হ্যাঁ, আপনি অনায়াসে অনেক গুলো লিড তৈরি করে নিতে পারবেন শুধুমাত্র এরকম একটি ইভেন্টে জয়েন করে। তাই আপনার লোকাল ইভেন্টগুলো কখন হয় সে সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। লোকাল ইন্টারপ্রেনারশিপ সেন্টার অথবা বিজনেস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার এ এই ইভেন্ট গুলো হোস্ট করা হয়ে থাকে। এরকম প্রতিটি শহরে হয়ে থাকে, আপনি তাদের ওয়েবসাইট চেক করে ও ধারণা নিতে পারেন।
এছাড়া বেশ কিছু এপ্স রয়েছে যেখানে আপনি আপনার কাছের ইভেন্ট গুলো সম্পর্কে খোঁজ রাখতে পারবেন। একটি হচ্ছে মিটআপ এবং আরেকটি হচ্ছে ইভেন্টব্রাইট । এই দুইটি এপের সাহায্যে আপনি আপনার এরিয়ার আশে পাশে কোথায় ইভেন্ট হচ্ছে তা জানতে পারবেন। মিটআপে আপনি বিভিন্ন রকমের গ্রুপ (group) খুঁজে পাবেন এবং ইভেন্টব্রাইটে আপনি সেগুলো ফিল্টার করে ও দেখতে পারেন।
৪) ফ্রিল্যান্সিং সাইটে সাইন আপ করুন
ক্লায়েন্ট পাওয়ার জন্য এটি সবচেয়ে পপুলার স্টেপ। ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলো সবসময় বুককিপার এবং একাউন্টেন্ট চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থাকে। আপনি আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার এসব সাইটে অনেক বুককিপিং রিলেটেড পোস্ট পেয়ে যাবেন। আপনাকে শুধু সেখানে এপ্লাই করা লাগবে।
সেখানে আপনার সাথে আর ও অনেক লোক কম্পিটিশনে থাকবে। তাই আপনাকে দেখাতে হবে কেন আপনি ঐ জব পোস্টের জন্য কোয়ালিফাইড। এজন্য আপনাকে স্ট্রং প্রোপসাল রেডি করে রাখতে হবে।
আপনি হয়তো প্রথম প্রথম এপ্লাই করে কাজ পেয়ে যাবেন না। তাই আপনাকে ধৈর্য ধরে রাখতে হবে এবং এপ্লাই করে যেতে হবে।
৫) সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করুন
হাবস্পটের এক তথ্য মতে, ৯২% মার্কেটাররা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাদের বিজনেসে সাহায্য পেয়েছেন। আবার সেই ৯২% মার্কেটারদের মধ্যে , ৮০% এমন মার্কেটার আছেন যারা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে ডাইরেক্ট ট্রাফিক পেয়ছেন তাদের ওয়েবসাইটে। তাই আপনার ওয়েবসাইটে রিসেন্ট ট্রেন্ড এবং স্টাডি সম্পর্কে ব্লগ এবং আর্টিকেল লিখতে পারেন। তারপর সেগুলো ফেইসবুক এবং টুইটারে শেয়ার করতে পারেন। এতে অনেক মানুষ আপনাকে জানবে এবং আপনি কোথায় এক্সপার্টিজ ধারন করেন সেটি জানবে। এরপর আপনার আর্টিকেল গুলো যত শেয়ার বা রিটুইট পাবে, তাতে আপনার ইনফ্লয়েন্স আর ও বাড়বে। এভাবে করে আপনি আপনার টার্গেট ক্লায়েন্ট তৈরি করে নিতে পারেন।
৬) অনলাইন ডাইরেক্টরিতে নিজেকে লিস্টেড করুন
আপনি নিজেকে অথবা আপনার বুককিপিং ফার্মকে বিভিন্ন ট্রাস্টেড অনলাইন ডাইরেক্টরি তে লিস্ট করে রাখুন। এতে আপনার পটেনশিয়াল ক্লায়েন্ট আপনাকে ইজিলি খুঁজে পাবে।
৭) মার্কেটিং টুল হিসেবে “হারো” (HARO) ব্যবহার করুন
হারো (HARO) একটি অনলাইন টুল যেটিতে প্রফেশনালরা তাদের আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকে। এখানে আপনি জার্নালিস্টদের বিভিন্ন রকম প্রশ্নে রেসপন্স করে আর্টিকেল পাবলিশ করার সুযোগ পেতে পারেন। এটি ব্যবহার করে আপনি ভাল রেসপন্স পাবেন আপনার পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টদের থেকে।
৮) ওয়েবিনার তৈরি করুন
ওয়েবিনার হচ্ছে ভিডিও প্রেসেন্টেশন অথবা লেকচার যেগুলো আপনার সাইট, ব্লগ এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাবলিশড হয়ে থাকে। ওয়েবিনারের মাধ্যমে আপনি গুরুত্বপূর্ণ ইনফরমেশন শেয়ার করতে পারবেন। এটি ও একটি ইফেক্টিভ স্টেপ হতে পারে আপনার এবং আপনার বিজনেসের জন্য।
উপরের সবগুলো মেথড একবারে ইমপ্লিমেন্ট করতে যাবেন না। প্রতিবার একটি করে মেথড এর উপর ফোকাস করুন এবং সেটি আপনার বিজনেস বা আপনার গ্রোথ এর জন্য কিভাবে এপ্লাই করা যায় সেদিকে খেয়াল রাখুন। এভাবে সাজেশন গুলো মাথায় রাখলে, আপনি একটি বড় রকমের ক্লায়েন্ট বেস (base) রেডি করতে পারবেন।