আপনি কি ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার হতে চান? আপনার নিজের ফটোগ্রাফি বিজনেস আপনাকে অনেক ফ্রিডম এনে দিবে কিন্তু কিভাবে শুরু করতে হবে এটি অনেকের অজানা। এই আর্টিকেলে আমরা সেগুলো কাভার করার চেষ্টা করবো। এর আগে আসুন জেনে আসি ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফি সম্পর্কে।
প্রথমত, ফটোগ্রাফি হচ্ছে একটি আর্ট। একটি সুন্দর সিন বা ছবি ক্যাপচার করতে দরকার প্যাশন এবং স্কিল। দ্বিতীয়ত, আপনার অনেক গ্যাজেট এর দরকার হবে অন্য ফ্রিল্যান্সিং জবগুলোর সাথে কম্পারিজন করলে। উদাহরণ হিসেবে ধরলে, আপনি যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর দিকে যান, তবে আপনার শুধু একটি ভাল ল্যাপটপ এই কাজ হয়ে যাবে। কিন্তু এখানে আপনার ভাল পরিমান টাকা ইনভেস্ট করতে হবে এবং শুরুতে ইনভেস্টমেন্টের তুলনায় আপনি একটু কম রিটার্ন পেতে পারেন। সুতরাং, ফটোগ্রাফিতে সাকসেস পেতে হলে, এর বিভিন্ন টেকনিক গুলো সম্পর্কে আপনার ভাল জ্ঞান থাকা লাগবে। তাই আর দেরি না করে কিছু টিপস শেয়ার করা যাক যাতে আপনি এই ফিল্ডে তুলনা মূলক কম খরচে ভাল একটা স্টার্ট করতে পারেনঃ
শুরুতেই যেটা বলা হয়েছে, আপনার ফটোগ্রাফি শুরু করার জন্য বেশ কিছু ইকুয়েপমেন্ট লাগবে। ক্যামেরা, লেন্স এবং ফ্ল্যাশ এর জন্য আপনাকে ইনভেস্ট করতে হবে। এছাড়া অনেকের রিফ্লেকটর, ডিফিউসার এবং লাইট এর প্রয়োজন হয়। এরা মুলত পোরট্রেইট বা রিয়েল এস্টেট ফটোগ্রাফি করে। যেগুলো সম্পর্কে আমি নিচে আলোচনা করবো। আপনি কি ধরনের ফটোগ্রাফি করতে চান, তার উপর নির্ভর করে আপনার ইকুয়েপমেন্ট লাগবে।কিন্তু শুরুতে বলা তিনটি ইকুয়েপমেন্ট যেকেনো ফটোগ্রাফির জন্য বেসিক নিড। এর মধ্যে লেন্স হচ্ছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি রিকোমেন্ড করবো শুরু তে অনেক বেশী এর পিছনে খরচ না করে, আপনার যখন একটা স্ট্যাবল ইনকাম থাকবে, তখন ধীরে ধীরে এটি চেঞ্জ করতে থাকবেন।
সবচেয়ে জরুরী বিষয় ফটোগ্রাফিতে ক্যারিয়ার শুরুর আগে, আপনি কোন ধরনের ফটোগ্রাফি করতে চান তা ডিসাইড করা। যারা কাজ করেছেন বা ফটোগ্রাফির প্রতি ইন্টারেস্টেড তারা ইতিমধ্যে ফটোগ্রাফির ক্যাটাগরির সাথে পরিচিত। তারপর ও সকলের বুঝার সুবিধার্থে আলোচনা করা যায়।
ফটোগ্রাফি নানা ধরনের হয়ে থাকে, যেমনঃ পোরট্রেইট ফটোগ্রাফি, প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফি, ওয়েডিং ফটোগ্রাফি, স্টক ফটোগ্রাফি। আপনাকে প্রথমে একটি জনরা বাছাই করতে হবে। অথবা আপনার মাল্টিপল জনরার ফটোগ্রাফি ভাল লাগে, তাহলে সেটি ঠিক করুন। এটি করার মেইন মোটিভ হচ্ছে আপনার লক্ষ্য যাতে ফিক্সড থাকে, তাতে আপনি ইজিলি জবগুলো পেতে পারবেন। দিনশেষে আপনি যেরকম ফটোগ্রাফি করে নিজের বেস্ট দিতে পারবেন, ছবির কোয়ালিটিও সেরকম আসবে। তাই আপনার নিজের পছন্দ জানা থাকতে হবে।
ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার হিসেবে, আপনার নিজের একটি সাইট থাকা ভাল যেখানে আপনি আপনার কাজ গুলো দেখাতে পারবেন। নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করা থাকলে আপনি অনেক বেনিফিট পাবেন। আপনি আপনার সাইটের এর মাধ্যমে ক্লায়েন্ট কে এ্যাপ্রোচ করতে পারবেন, অর্ডার ম্যানেজ করতে পারবেন এবং সব থেকে বড় কথা আপনার সাইট এর মাধ্যমে আপনি বিজনেস রিচ পাবেন অনেক বেশী।
ফ্রিল্যান্সিং জবে ট্র্যাক ঠিক রাখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। স্পেশালি যখন আপনার বিজনেস গ্রো করতে থাকবে। অনেক টাস্ক, ডেডলাইন থাকবে যেগুলো এককথায় আপনি সব ব্রেইনে প্রসেস করতে পারবেন না। যার জন্য আপনার প্রতিদিনের কাজের শিডিউল ঠিক থাকা লাগবে। একটি ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন আছে বারচপ্রেস শিডিউলার (BirchPress Scheduler) নামে যেটিতে আপনি এপয়েন্টমেন্ট নিতে পারবেন, ক্লায়েন্টদের এভিলিভিলিটি চেক করতে পারবেন। এছাড়া আর ও নানা ধরনের কাজ করা যায় এই প্লাগইন দিয়ে। এটি ট্রাই করে দেখতে পারেন।
লিস্ট করে রাখাটা ও কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ না। আপনি ছোট ছোট অনেক কাজ লিস্ট করে রাখতে পারেন, এর প্রায়োরিটি সেট করে রাখা বা কোন দিনে কোন ক্লায়েন্টের কাজ শেষ করা এসব কিছু নোট রাখাটা খুবই ভাল প্রাক্টিস। টেক্সডেক্স (teuxdeux.com) নামে একটি সাপ্তাহিক কাজ লিস্ট করার সাইট আছে যেটি খুবই ইজিলি ব্যবহার করা যায়।
শুরুতে আপনি আপনার পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টকে আপনার কাজ দেখানোর জন্য যোগাযোগ করতে পারেন। টাইম নিয়ে ভাবুন কিভাবে উনাদের থেকে কাজগুলো নিতে পারবেন।এ ক্ষেত্রে একটি ই-মেইল এ রিচ করা দারুন রেজাল্ট আনতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন ব্লগ ওনার দের সাথে যোগাযোগ করে দেখতে পারেন তারা আপনার কাজ ফিচার করতে ইচ্ছুক কিনা। আপনার কাজ তাদের সাইট এ কিভাবে ভ্যালু বাড়াবে তাও তাদেরকে বুঝিয়ে অফার করতে পারেন।
আপনি যদি কোন কাজ সপ্তাহ শেষে যেমন ফ্রাইডে তে শেষ করতে পারবেন বলে জানেন, তবু ও ক্লায়েন্ট কে ঐদিন ফিক্সড করে দিবেন না। এতে করে কোন আরজেন্সি এসে পড়লে ও আপনি কাজটি ডেডলাইনের আগে শেষ করতে পারবেন। ডেডলাইনের আগে কাজ শেষ হলে, ক্লায়েন্ট আপনার উপর ইম্প্রেসড হবে। এই সিম্পল কাজটি ফিউচারে আপনার অনেক কাজের অপরচুনিটি বাড়িয়ে দিবে।
আপনার সাকসেসফুল ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার হওয়ার অনেকটাই নির্ভর করে আপনার কাজটি ক্লায়েন্ট কিভাবে নিচ্ছে। কিভাবে আপনি আপনার কাজ ডেলিভারি দিবেন যাতে আপনার কাজে মুগ্ধ না হয়ে পারেই না। তা নিশ্চিন্ত করার জন্য আপনার সবসময় এডিটিং করতে হতে পারে। বেসিক জিনিষ গুলো দেখে নিবেন ঠিক আছে কিনা। যেমনঃ ব্যাকগ্রাউন্ড এডজাস্টমেন্ট, কালার ব্যালান্সিং, স্কিন টোন ঠিক রাখা ইত্যাদি।
আপনার নিজের স্কিল বাড়ানোর জন্য এডুকেশন অনেক জরুরী। তাই আপনি লোকাল কোন ওয়ার্কশপে জয়েন করতে পারেন অথবা অনলাইনে এক্সপার্টদের রিসোর্স দেখে নিতে পারেন অথবা পপুলার ফটোগ্রাফারদের কমিউনিটি জয়েন করতে পারেন। এতে করে আপনি নতুন কিছু শিখবেন শুধু তাই নয় বরং আপনার কাজে সাপোর্ট এর জন্য অনেক সহযোগী ফটোগ্রাফার এর খোঁজ পাবেন।
আশা করছি উপরের এই আর্টিকেলটি আপনাকে আপনার ফটোগ্রাফি ক্যারিয়ারে কিছুটা হলে ও হেল্প করতে পারবে।